খেদারমারার কনিষ্ক চাকমার উচ্চ শিক্ষা অনিশ্চিত প্রকাশিত: ১:৫৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১ //মোঃমহিউদ্দিন, বাঘাইছড়ি// বাঘাইছড়ি উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে পত্যন্ত এলাকা খেদারমারা ইউনিয়নের পাবলাখালী গ্রামের রাঙাজয় চাকমার ছেলে কনিষ্ক চাকমা। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি মা-বাবার সঙ্গে কৃষিকাজ করছেন। অবসর সময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রাইভেট পড়াতেন। এ করেই এত দিন কেবল ইচ্ছাশক্তির কারণে শিক্ষাজীবনে একের পর এক সফলতা পেয়েছেন । ১৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে পাবলাখালী গ্রামে নিজ বাড়ীতে কনিষ্ক চাকমা জানায় একটা সময় সব ঠিক ছিল তার , কিন্তু ২০১২ সালে দুর্ঘটনায় তাঁর বাবার একটি (বাঁ) পা ভেঙে যায়। এরপর তাঁর বাবার চিকিৎসা দিতে গিয়ে লেখাপড়ার অনিশ্চিয়তা দেখা দেয় কনিষ্ক চাকমার। পরে তাঁর মামার বাড়ি সারোয়াতলী গ্রামে আশ্রয় নেন। সেখানে তাঁর মামা বিনয় চাকমা সারোয়াতলী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে বিনা বেতনে আবেদন করার পর ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করিয়ে দেন। সারোয়াতলী উচ্চবিদ্যালয় থেকে ব্যবসা শাখায় এসএসসিতে জিপিএ–৪ পান কনিষ্ক চাকমা। এইচএসসিতে জিপিএ–৪ দশমিক ১৫ পান। চলতি বছরে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেন। এতে তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়ে যান। তবে কনিষ্ক চাকমা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার আগ্রহ জানিয়েছেন। কিন্তু টাকার অভাবে ভর্তি ও পড়াশোনা করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। এত দিন টাকার সহযোগিতা দিতে না পারলেও পড়াশোনায় সাহস জুগিয়েছেন তাঁর মা আনন্দ রানী চাকমা। গত বছরের ৭ জানুয়ারি তিনিও মারা যান। কনিষ্ক চাকমা বলেন, তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছেন। সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। সি ইউনিট থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ১২ অক্টোবর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ অক্টোবর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৩ নভেম্বর পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাতালিকায় ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুবই সূচনীয় এক হাজার টাকা জোগাড় করাও সম্ভব নয়, তাই এই মুহূর্তে আমার পড়াশোনা অনিশ্চিত। কিভাবে কি করবো কোথায় থাকবো কিভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যাবো। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ইউনিট থেকে ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় আছেন কনিষ্ক চাকমা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও টাকার অভাবে ভর্তি ও লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে তাঁর। অসুস্থ কৃষক বাবার পক্ষে কনিষ্ক চাকমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর সামর্থ্য নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। খেদারমারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সন্তুোষ কুমার চাকমা বলেন, পঞ্চম শ্রেণি অবস্থায় তাঁর বাবার পা ভেঙে যায়। ছোট বেলা থেকেই সে খুব মেধাবী, তার পড়াশোনার নিয়মিত আমি খোঁজ রাখার চেষ্টা করেছি , তার এসএসসি ও এইচএসসি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সময় আমার সাধ্যমত আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। কনিষ্ক চাকমার বাবা রাঙাজয় চাকমা বলেন, আমি পুরোপুরি সুস্থ নয়। সামান্য কৃষিকাজ করে তিন সন্তানকে লেখাপড়া করানো আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তিন সন্তানের মধ্যে কনিষ্ক সবার বড়। মেজো মেয়ে রাঙামাটি মেডিকেলে নার্সিং পড়ছে ও ছোট মেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে সামনে ভর্তি হবে। আমার পরিবারের অবস্থা খুবই সূচনীয় এখন সরকার যদি আমাদের সহায়তা না করে তাহলে মেধা থাকলেও তা আমাদের কোন কাজে আসবেনা। তাই সরকারের সহায়তা কামনা করছি। পাবলাখালী গ্রামের কারবারি মৃত সুরেশ কান্তি চাকমার ছেলে কাঠ ব্যাবসায়ী সুখময় চাকমা বলেন, কনিষ্ক চাকমা আমাদের গ্রামের গর্ব আমি ব্যাক্তিগত ভাবে বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশ নেয়ার পূর্বে তাকে সহায়তা করেছি, আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করবো কনিষ্ক চাকমা সহ এলাকার মেধাবীদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষা বৃত্তি চালুর যাহাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়। SHARES প্রচ্ছদ বিষয়: