কাপ্তাই হ্রদে ভাসছে বাঘাইছড়িতে তৈরী হাউজবোট ‘রয়েল এডভেঞ্চার’

প্রকাশিত: ১১:৩৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩

রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই লেকে পর্যটক নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে বাঘাইছড়িতে তৈরী “রয়েল এডভেঞ্চার” নামে একটি দ্বিতল বিশিষ্ট হাউজবোট। বলা হচ্ছে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কাঠের তৈরি হাউজবোট এটিই।

গত ১৪ জানুয়ারি শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে শুভ উদ্বোধন হয়েছে হাউজবোটটির।

উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য এবং রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. মুছা মাতব্বর, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত ভিসি মিস সেলিনা আখতার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. শাওয়াল উদ্দিন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা, জেলার সম্মানিত বিশেষ ব্যাক্তিবর্গ প্রমুখ। উদ্বোধন শেষে অতিথিদের নিয়ে কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণ করে হাউজবোটটি।

এ সময় রয়েল এডভেঞ্চার এর পরিচালকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মো: মহিউদ্দিন মজুমদার আনন্দ, মো: মিজানুর রহমান, মোঃ ফারুক আহমেদ, মো: বখতিয়ার, ইমন বড়ুয়া প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বৃষকেতু চাকমা বলেন, রাঙ্গামাটি একটি পর্যটন নগরী এখানে হ্রদ, পাহাড়, ঝর্ণা একসঙ্গে উপভোগ করা যায়। হ্রদের বুকে এই ধরনের সুন্দর সুবিধা সম্বলিত একটি হাউজবোট পর্যটকদের দারুণভাবে আকর্ষণ করবে বলে আমার বিশ্বাস। পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়দের জন্য লেকে বেড়ানোর এক দারুণ মাধ্যম তৈরি হলো।

বিশেষ অতিথি হাজী মো. মুছা মাতব্বর বলেন, আমরা সাধারণত ভিয়েতনাম, চায়না, থাইল্যান্ড ইন্ডিয়া এসব দেশে এই ধরনের হাউজবোট দেখতে পাই এখন রাঙ্গামাটিতে এই ধরনের হাউস বোট চালু হওয়ায় আমি মনে করি আমরাও ধীরে ধীরে উন্নত দেশের পর্যটন শিল্পে ভালো করতে যাচ্ছি। এই হাউজবোট গুলো পর্যটকদের কাছে আকর্ষণ হিসেবে কাজ করবে এবং পাশাপাশি রাঙ্গামাটির পর্যটন বিকাশে ভূমিকা রাখবে।

রয়েল অ্যাডভেঞ্চারের মার্কেটিং পরিচালক মো. মহিউদ্দিন মজুমদার বলেন, পর্যটন খাতে কাজ করার মানসিকতা থেকেই আমরা এই হাউস বোটটি তৈরি করেছি। এটি শুধু রাঙ্গামাটি নয় কাঠের তৈরী দেশের সবচেয়ে বড় হাউজবোট রয়েল এডভেঞ্চার। আমাদের এখানো মোট আটটি রুম রয়েছে। যার মধ্যে বারান্দাসহ দুটি সুপার প্রিমিয়াম রুম আছে এবং প্রতিটি রুমই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, প্রতিটি রুমের সঙ্গে ওয়াশরুম আছে। প্রতি রুমে চারজন করে থাকা যাবে। আমাদের বোটেই নিজস্ব রেস্টুরেন্ট আছে। আমরা স্থানীয় এবং ট্রেডিশনাল খাবারগুলো সার্ভ করার চেষ্টা করি। যাতে পর্যটকরা স্থানীয় খাবার সম্পর্কে একটা ধারণা লাভ করতে পারে।

রয়েল এডভেঞ্চার কো চেয়ারম্যান রিকন বড়ুয়া দৈনিক বাঘাইছড়িকে বলেন, এমন একটি প্রজেক্ট করার ইচ্ছে বা স্বপ্ন ছিলো বহুদিন ধরে, আমার ছোট ভাই ইমন এবং বখতেয়ার আইডিয়া দিলো কাপ্তাই লেকে ভ্রমণ প্রেমীদের জন্য কি করা যায় আমি তাদের সাথে একমত হয়ে  আমার ৩ জন বন্ধুর মতো ছোট ভাই আনন্দ, ইশতিয়াক, মিজান ওদের বলি এবং ওরা রাজি হয়। এরপর আমার এলাকা বঙ্গলতলী ইউনিয়নের করেঙ্গাতলীতে কাচালং নদীর তীরে দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস সময় নিয়ে নিজ হাতে এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করি। এরমধ্যে অনেক ত্যাগ স্বীকার এবং তিক্ততার অভিজ্ঞতা হয়েছে তারপরও হাল ছাড়িনি, আশা করি আমরা সফলতার সাথে পর্যটন খাতে অবদান রাখতে পারবো।

প্রতিবেদন প্রকাশের পূর্ব পর্যন্ত রয়েল এডভেঞ্চারে ২ টি ট্রিপে ১৪৫ জন যাত্রী ভ্রমণ করেছে।

এক পর্যটককে বোটে রাত্রী যাপনের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পূর্বে কাপ্তাই লেকে বোটে করে বেড়িয়েছি তবে এবারই প্রথম রাত্রী যাপন করলাম যা আমার জীবনের অন্যতম একটি ভ্রমণের অংশ হিসেবে স্মৃতিতে রয়ে যাবে। সঠিকভাবে পরিচালিত হলে পর্যটকদের আকর্ষণ করতে বাধ্য হবে এই হাউজবোট।