বাঘাইছড়িতে জনসংহতি সমিতির প্রত্যাগত সদস্যদের যথাযথ পুনর্বাসনের দাবীতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ২:৫৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ২, ২০২৩

||নিউজ ডেস্ক||

রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার বাঘাইছড়ি গ্রামে বাঘাইছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রত্যাগত সদস্যদের যথাযথ পুনর্বাসন, মামলা প্রত্যাহার ও নিরাপত্তার দাবীতে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১জুলাই) সকাল ৮:৩০ ঘটিকায় সময়ে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাবেক প্রত্যাগত সদস্য সুমতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাবেক ২৮৮ জন প্রত্যাগত সদস্য অংশগ্রহণ করেন।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রামের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই চুক্তির পরপরই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী অস্ত্র জমা দানের পর স্ব স্ব এলাকায় স্বাভাবিক জীবনে প্রত্যাবর্তন করলেও এখনো সেই কাঙ্খিত শান্তি আমাদের মেলেনি। নূন্যতম যে আশা-ভরসা নিয়ে আমরা একসময় সরকারের কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছিলাম সেই আশা শুধু মাত্র আশায় থেকে গেলো।

এসময় বক্তারা আরও বলেন, আজকে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে সেই দীর্ঘ ২৫ বছর আগে। কিন্তু সেই দীর্ঘ ২৫ বছরেও চুক্তির মৌলিক বিষয়সমূহসহ এখনো দুই-তৃতীয়াংশ ধারা হয় আংশিক বাস্তবায়িত নয়তো সম্পূর্ণ অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে। আজকে আমরা যাঁরা অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছি তাদের মধ্যে জরিপ চালালে দেখা যাবে নব্বই শতাংশ জনসংহতি সমিতির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের
সুপরিকল্পিতভাবে অবৈধ গ্রেফতার, বিচার-বহির্ভুত হত্যা, অস্ত্র গুঁজে দিয়ে আটক, মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে প্রেরণ করা হয়েছে নতুবা অনেক নেতাকর্মী মিথ্যা মামলা-হামলার ভয়ে ফেরারি জীবন কাটাচ্ছে।

তাঁরা অনেকই আরও গভীর হতাশার সুরে বলেন, আমরা তো এমন জীবন চাইনি! আমরা চেয়েছিলাম একটি সুষ্ঠ, সুন্দর, নিরাপদ জীবন। যেখানে আমরা সমাজের স্বাভাবিক স্রোতে মিশে গিয়ে চলতে পারবো, ফিরতে পারবো সর্বোপরি অন্য দশজন মানুষের মত পরিবার-পরিজন নিয়ে বাকী জীবনটা সুখে শান্তিতে কাটিয়ে দিতে পারবো। তাইতো আমরা সেদিন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বসবাস করার সকল শর্ত মেনে নিয়েই চুক্তিটি করেছিলাম। কিন্তু আজকে চুক্তির ২৫ বছরে এসে কেন আমাদের এভাবে ঘর-বাড়ি ছেড়ে মানবেতর পরিবেশে জীবন কাটাতে হবে!

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি’র প্রত্যাগত সদস্যগণের পুনর্বাসন, মামলা প্রত্যাহার ও নিরাপত্তার বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব জ্যোতিষ্মান চাকমার প্রেরিত বার্তায় বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী প্রত্যাগত জনসংহতি সমিতির সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গের যথাযথ ও সম্মানজনক পুর্নবাসন, মিথ্যা ও সাজানো মামলা প্রত্যাহার এবং জনসংহতি সমিতির প্রত্যাগত সকল সদস্যদের নিরাপত্তা বিধানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।