মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও বন্দীদের মুক্তির দাবিতে ইউপিডিএফ এর বিক্ষোভ সমাবেশ প্রকাশিত: ১০:১১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৭, ২০২৪ “একদেশে দুই শাসন মানি না” শ্লোগানকে সামনে রেখে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আটক ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক উজোবাজারে ইউপিডিএফ দলীয় অফিসের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭আগষ্ট) সকাল ৯:৩০টার সময় বিভিন্ন শ্রেণী পেশাজীবির ৫শতাধিক মানুষের উপস্হিতিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) ও তার সহযোগী সংগঠন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি),গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচ ডব্লিউএফ) ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম সাজেক থানা কমিটির সাংগঠণিক সম্পাদক মি,শুক্র চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম বাঘাইছড়ি উপজেলা কমিটির সভাপতি বীর চাকমা,বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ,বাঘাইছড়ি উপজেলা কমিটির সভাপতি পলেন চাকমা,হিল উইমেন্স ফেডারেশন বাঘাইছড়ি কমিটির সাংগঠণিক সম্পাদক পরান মোনা চাকমা,পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ বাঘাইছড়ি উপজেলা কমিটির সহ সভাপতি উজ্জলা চাকমা,ইউপিডিএফের অন্যতম সংগঠক রুপেশ চাকমা,সাজেক গণ অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব বাবু ধন চাকমা ও স্হানীয় মুরুব্বিরা উপস্থিত ছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়ন নির্যাতনের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে অজানা নয়। আমরা দেখেছি ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার পতন হয়েছে। দেশে গণঅভ্যুত্থান হলেও পার্বত্য চট্টগ্রাম এখনো মুক্ত হয়নি, তার অন্যতম কারণ পাহাড়ে এখনো সেনাশাসন জারি রয়েছে। যুগ যুগ ধরে চলমান সেনাশাসন পাহাড়ের পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল রেখছে। অবিলম্বে পাহাড় থেকে সেনাশাসন প্রত্যাহার করার দাবি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাস বাঘাইছড়ি উপজেলা কমিটির সভাপতি বীর চাকমা। পাহাড় বাঁচাতে এগিয়ে আসতে হবে সমতলের মানুষদের। কারণ আমরাও এদেশের সন্তান। পাহাড়ের ছাত্র জনতা অধিকার আদায়ে আন্দোলন সংগ্রামে পিছিয়ে নেই, তাই আমাদের চলমান আন্দোলন সফল করতে সমতলের মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে বক্তব্য তুলে ধরেন,বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ বাঘাইছড়ি উপজেলা কমিটির সভাপতি পলেন চাকমা। হিল উইমেন্স ফেডারেশন বাঘাইছড়ি উপজেলা কমিটির সাংগঠণিক সম্পাদক পরান সোনা চাকমা সকলকে সংগ্রামী শুভেচ্ছা জানিয়ে সমাবেশের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন,অন্যায়ের বিরুদ্ধে যারা কথা বলেন তারা খুন,গুম,হত্যা,অপহরণসহ আয়নাঘরের মত নারকীয় বন্দি দশার শিকার হন। জুম্ম জনগণের ন্যায্য দাবার নেতৃত্ব দিতে গিয়ে ইউপিডিএফ কেন্দ্রীয় নেতা আনন্দ প্রকাশ চাকমা ও পিসিপি নেতা কুনেন্টু চাকমাসহ বহু নেতাকর্মীকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমুলক মামলা দিয়ে জেল হাজতে বন্দি রাখা হয়েছে। ১৯৯৬সালে নিজ বাড়ি থেকে কল্পনা চাকমাকে অপহরন করা হয়েছে।দীর্ঘ ২৮বছর পরও তার কোন হুঁদিশ মিলেনি। ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনের সকল বন্দি নেতাকর্মীদের নি:শর্ত মুক্তি দাবি জানান।অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই সংগ্রামে নারীদের আন্দোলনে অংশগ্রহনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। শেখ হাসিনার সরকার পতন হলে,গোঠা দেশের গণতন্ত্র পরিবেশ সৃষ্টি হলেও পাহাড়ে এখনো গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। পাহাড়ে এখনো সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ব অব্যহত রয়েছে। ইতিমধ্য রাঙ্গামাটি,বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি রামগড়ে সেটলার কর্তৃক পাহাড়ি নাবালিকামেয়ে ও গৃহবধূর উপর গণ ধর্ষনের মত জঘন্য ঘটনা ঘটেছে।আমরা পাহাড়বাসী বিশেষ করে মেয়েরা কখনো নিরাপদ নয়। রামগড় পাতাছড়াসহ সংগঠিত সকল নারী ধর্ষনের সাথে যারা জড়িত বিচারীক মাধ্যমে ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমুলক শান্তির দাবি করেন,পার্বত্য নারী সংঘ বাঘাইছড়ি উপজেলা কমিটির সহ সভাপতি উজ্জলা চাকমা। ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনর সকল নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবীসহ জাতিস্বত্তার সাংবিধানিক অধিকার,পাহাড়িদের সরকারী চাকুরি ও অন্যান্য সুবিধাসহ পূর্বের যে ৫% কোটা পূনর্বহাল,সেনাসৃষ্ট ঠ্যাঙারে বাহিনী ভেঙে দেয়াসহ ১৯০০সালের পার্বত্য আইন বলাবৎ রাখার দাবি জানান সাজেক গণ অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব বাবু ধন চাকমা। রুপেশ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের আন্দোলন অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলন।এ রাষ্ট্রে নিপীড়ন মুলক খুন গুম অপহরণও গ্রেপ্তার করে এ আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না বলে রাষ্ট্রীয় দমন পীড়কদের উদ্দেশ্য হুঁশিয়ারী উচ্চারন করে বলেন,যে জাতি লড়াই করতে গিয়ে আত্মবলিদান দিতে জানে,আয়নাঘরের মত বন্দিদশায় থেকেও অধিকারের জন্য প্রতিবাদ করতে সাহস রাখে,অধিকারের আন্দোলন করতে গিয়ে ষাটোর্ধ ইউপিডিএফ নেতা আনন্দ প্রকাশ চাকমারা জেল হাজতে অন্তরীন হয়ে কঠিন জীবন নিয়ে বেঁচে থাকতে পারে সে জাতি ও অধিকারকামী আন্দোলনকে কখনো দমিয়ে রাখা যায়নি,ভবিষ্যতেও যাবেনা।পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা রাজনৈতিক সমস্যা উল্লেখ ককরে বলেন,জেল জুলুম,হত্যা,খুন,গুম,অপহরন সহ ঠ্যাঙারে বাহিনী দিয়ে দমিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা সমাধান করা যাবেনা।গত ৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার লড়াই সংগ্রামে মধ্যে দিয়ে ফ্যাসিবাদী শাসন পরিবর্তন ঘটলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তন ঘটেনি।আগের মতই সেনা শাসন অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবী জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারকৃত রাজবন্দীদের মুক্তিসহ সকল হত্যার বিচার করতে হবে। পরিশেষে, সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সভা সমাপ্তি ঘোষনা করেন,ইউপিডিএফ সংগঠক রুপেশ চাকমা। ||বিজ্ঞপ্তি|| SHARES সংগঠন বিষয়: